চকরিয়া-পেকুয়ায় অবাধে বালু উত্তোলন

হুমকির মুখে মাতামুহুরী নদীর বাঘগুজারা ও পালাকাটা পয়েন্টের রাবারড্যাম

এ কে এম ইকবাল ফারুক,চকরিয়া •

কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়ায় অর্ধশতাধিক স্পটে নদী-খাল থেকে অবাদে বালু উত্তোলন হচ্ছে। এক শ্রেণির প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নদীর অসংখ্য পয়েন্টে বালু উত্তোলনের মেশিন বসিয়ে দিন-রাত সমান তালে বালু উত্তোলনের ফলে নদীতে সৃষ্টি হচ্ছে অসংখ্য চোরাবালুর গর্ত। পাশাপাশি প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে নদীর দু’পাড় ভেঙ্গে নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

এছাড়া উপকূলীয় এলাকার ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি থেকেও মাটি লুটের মহোৎসব চলছে। মাতামুহুরী থেকে নির্বিচারে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে এ নদীর বাঘগুজারা ও পালাকাটা পয়েন্টের দুটি রাবারড্যাম।

জানা যায়, সরকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে চকরিয়া ও পেকুয়ায় ৭০ হাজার একর জমির ইরি-বোরো চাষ নিশ্চিত করার জন্য মাতামুহুরী নদীর বাঘগুজারা ও পালাকাটা পয়েন্টে দুটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করে। বর্তমানে বালু উত্তোলনের জন্য পালাকাটা রাবার ড্যামের সওদাগরঘোনা পয়েন্টে চারটি অত্যাধুনিক ড্রেজার আনা হয়েছে। এসব ড্রেজার রাবার ড্যামের ওপর দিয়ে পার করা হলে রাবারব্যাগ ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা করছে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড কতর্ৃপক্ষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের চিরিংগা শাখার কর্মকর্তা (এসও) সালমান জানান, এসব ড্রেজার রাবার ড্যামের ওপর দিয়ে পার করার সুযোগ দেয়ার জন্য প্রভাবশালী মহল থেকে বিভিন্নভাবে চাপ দেয়া হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী এক নেতার সহযোগিতায় সদ্য নির্বাচিত সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবী হোছাইন ড্রেজারগুলো ভাড়া করে এনেছেন বালু উত্তোলনের জন্য।

এ দিকে রাবারড্যাম ডিঙিয়ে চারটি ড্রেজার বালু উত্তোলনের জন্য আনার খবরে এলাকার কৃষকদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। তাদের দাবী, ড্রেজার ঢুকিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হলে বোরো চাষ ও পরিবেশের বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটবে।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোছাইন বলেন, সরকারি একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সংশ্নিষ্ট ঠিকাদার ড্রেজারগুলো ভাড়া করে এনেছেন। তবে জনস্বার্থ পরিপন্থি হলে ড্রেজারগুলো রাবার ড্যামের ওপর দিয়ে ঢুকতে দেয়া হবে না।

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও কৃষি জমির মাটি কেটে নেয়া প্রসঙ্গে চকরিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাহাতুজ্জামানের বলেন, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে বালু উত্তোলনের মেশিন ও ফাইপ জব্দ করা হয়েছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান বর্তমানেও অব্যাহত রয়েছে।